Skip to main content

সাজেকের জনপ্রিয় সব রিসোর্টের তথ্য

লেখকঃ নুরুল করিম

আকাশে শুভ্র মেঘের উড়াউড়ি দেখতে সবারই ভালো লাগে, আর অনেক সময়তো আমাদের ইচ্ছে করে মেঘকে ছুঁয়ে দেখতে। রাঙামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলায় অবস্থিত সাজেক ভ্যালি তেমনি এক স্বপ্নময় স্থান। চারপাশে সাদা মেঘের ভেলা মনের ক্লান্তিকে যেন ভাসিয়ে নিয়ে যায়। সবুজে ঢাকা পাহাড়, সাদা মেঘ আর আলোআঁধারির খেলায় সবসময় মেতে থাকে এই সাজেক ভ্যালি।

বর্ষা, শরৎ এবং হেমন্ত সাধারণত এই তিন ঋতুতে মেঘের লুকোচুরি দেখতে পর্যটকদের বেশি সমাগম ঘটে। পর্যটকদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে সাজেক ভ্যালিতে থাকার ব্যবস্থা হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে বেশকিছু রিসোর্ট।

যেখানে আপনি নিশ্চিন্তে পরিবার বা বন্ধুদের নিয়ে থাকতে পারবেন। হোটেলস ইন বাংলাদেশ এর অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে অনেকেই সাজেকের হোটেলের তথ্য দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছিলেন। তাদের প্রতি সম্মান রেখে বিস্তারিত দেওয়া হলো-

সাজেক রিসোর্ট
সেনাবাহিনী দ্বারা পরিচালিত এই সাজেক রিসোর্টটি এসি আর নন এসি ভেদে প্রতিটি রুম ভাড়া ১০,০০০ থেকে ১৫,০০০ টাকা। রিসোর্টটির দ্বিতীয় তলায় আছে সব মিলিয়ে চারটি কক্ষ। সাথে আছে খাবারের ব্যবস্থাও।

সাজেক রিসোর্টটি এমন ভাবে তৈরি করা যে রুমের ভেতর থেকে তাকালেই বাহিরের সাজেকের পুরোটা রূপ খুজে পাওয়া যায়। তাই বেশিরভাগ কাপলরা প্রকৃতির সাথে মিশে যেতে এই রিসোর্টটি কে বেছে নেয় সবার আগে। যোগাযোগ: ০১৮৫৯-০২৫৬৯৪, ০১৮৪৭-০৭০৩৯৫ অথবা ০১৭৬৯-৩০২৩৭০।

রুন্ময় রিসোর্ট
এই রিসোর্টে আছে মোট পাঁচটি রুম। প্রতিটি রুমে দুই জন করে থাকা যাবে। নিচ তলার রুম ভাড়া ৪৪৫০ টাকা। প্রতিটি কক্ষে দুই জন করে থাকতে পারবে। এর বেশি লোকসংখ্যা হলে বাড়তি টাকা খসাতে হবে। অতিরিক্ত বেড ভাড়া ৬০০ করে।

উপরের তলায় মোট দুইটি কক্ষ আছে। কক্ষ দুইটির ভাড়া ৪৯৫০ টাকা করে পাওয়া যাবে। সেখানেও ৬০০ টাকা দিয়ে অতিরিক্ত বেড পাওয়া যাবে। আরো বিস্তারিত তথ্য জানতে যোগাযোগ করুন : ০১৮৬৫৪৭৬৮৮। ফেসবুক: Runmoy Resort

সুমুই রিসোর্ট
ভোরবেলা ঘুম ভেঙে পর্দা সরাতেই মিষ্টি রোদের আলো আপনাকে স্বাগত জানালো, নির্লিপ্ত ঠোটে চায়ে চুমুক দিতেই একরাশ শুভ্র মেঘ এসে আপনার তুলতুলে গালটি আলতো করে ছুঁয়ে দিল, কেমন হবে বলুন তো! এমন অনুভুতি পেতে ছুটতে হবে রুইলুই পাড়ার সুমুই রিসোর্টে। ২৫০০ থেকে ৪০০০ টাকার মধ্যে এখানে রুম পাবেন। যোগাযোগ: ০১৮৮০৯০৮৪৪৮। ফেসবুক: SUMUI Eco Resort

মেঘপুঞ্জি রিসোর্ট
সুন্দর ইকো ডেকোরেশন ও আকর্ষণীয় ল্যান্ডস্কেপিক ভিউ সহ এখানে আছে ৪ টি কটেজ। প্রতিটি কটেজে মোট ৩ থেকে ৪ জন থাকা যাবে। প্রতিটি কটেজে রয়েছে একটি করে বড় বেড। ভাড়া ২৫০০ থেকে ৩৫০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাবে এসব কটেজে।

প্রতিটি কটেজ গ্লাস দিয়ে ঘিরে দেওয়ার কারণে কটেজের ভেতর থেকেই দেখা যায় সাজেকের ফুল ইনিফিনিটি ভিউ। প্রতিটি কটেজে পূর্ব দিকে মুখ করে বারান্দা দেওয়া আছে। যেখানে দাঁড়িয়ে মেঘ,পাহাড় ও আকাশের সুন্দর ভিউ পাওয়া যায়। বুকিং: ০১৮১৫৭৬১০৬৫। ফেসবুক: মেঘপুঞ্জি – সাজেক

রিসোর্ট রুংরাং
এখানে আছে ছয়টি ডাবল ও ৪ টি কাপল রুম। প্রতিটি ডাবল রুমের ভাড়া ২৫০০ টাকা ও কাপল রুমের ভাড়া ৩৫০০ টাকা। কাঠের কারুকাজ দ্বারা নির্মিত এ রিসোর্টগুলো দেখলেই মন ভালো হয়ে যায়। চারিপাশে সবুজ গাছপালা,পাশ দিয়ে বহু দূর পর পর কটেজ গুলো।

এর সাথে আপনার হেঁটেচলা। কি অসাধারণ! অন্যরকম এক অনুভূতি। রিসোর্ট রুংরাং থেকে সাজেককে আপনি দেখতে পারবেন খুব কাছ থেকে। তাই বেশিরভাগ পর্যটকরা কটেজগুলোর মধ্যে রুংরাংকে প্রাধান্য দিয়ে থাকেন। বিস্তারিত: ০১৮৮৬৩৬৩২৩২ অথবা ০১৮৬৯৬৪৯৮১৭।

মেঘ মাচাং
তুলনা মুলক কম খরচে থাকার জন্য এবং সুন্দর ভিউ পাওয়ার জন্য অনেকেই এই রিসোর্টটি পছন্দ করে থাকে। এখানে মোট পাঁচটি কটেজ আছে। এই পাঁচটি কটেজের মধ্যে তিনটি কটেজ এর ওয়াশরুমে হাই কমোড এবং বাকি দুইটি কটেজে এর ওয়াশরুমে লো কমোড দেওয়া আছে। প্রতিটি কক্ষে এটাচ বাথরুম এর ব্যবস্থা আছে।

প্রতিটা কটেজের কক্ষের ভাড়া মাত্র ২৫০০ থেকে ৩৫০০ টাকা। এক কক্ষে চার থেকে পাঁচ জন একসাথে থাকা যাবে। প্রায় সব গুলো কটেজেই হিল ভিউ । কাঠের বারান্দায় দাঁড়িয়ে এক চিলতে রৌদ্রোজ্জ্বল সাজেকের প্রান্তের দিকে তাকালে মনটাই ভালো হয়ে উঠে। যোগাযোগ : ০১৮২২১৬৮৮৭৭। ফেসবুক: Megh machang

সারা রিসোর্ট
সারা রিসোর্টে মোট চারটি রুম আছে। তিনটিতে আছে এটাচ বাথরুম, ১ টি কমন বাথরুম। এই রিসোর্টে মোট পঁচিশ জন থাকা যাবে। তবে টিনের তৈরি রুমগুলো খানিকটা ছোট। কক্ষগুলোতে সোলারের ব্যবস্থা আছে। যোগাযোগ: ০১৮৪৬৫৩৯১৩১, ০১৮৭১০৯৮১২২।

জুমঘর ইকো রিসোর্ট
এখানে থাকার জন্য কাপল রুম বা শেয়ার রুম আছে। প্রতি কটেজ ভাড়া মাত্র ২০০০ থেকে ৩০০০ টাকা। শীতের ভোরে জমে থাকা শিশির বিন্দু ও খোলা বারান্দায় দাড়িয়ে সাজেকের মেঘ দেখার সৌভাগ্য হবে যদি এই জুমঘর ইকো রিসোর্ট এ থাকা যায়। যোগাযোগ: ০১৮৮৪২০৮০৬০।

লুসাই কটেজ
লুসাই কটেজে বসেই উপভোগ করতে পারবেন মেঘের ভেলা ও সূর্যোদয়। কটেজে থাকা – খাওয়া সুব্যবস্থা ছাড়াও আছে সুন্দর ডেকোরেশন করা প্রতিটি রুম। সাজেকের সুন্দর ভিউ পাওয়ার জন্য অধিকাংশ লোক এই লুসাই কটেজকেই বেছে নেয়। কটেজের প্রতিটা রুমের ভাড়া ২০০০ থেকে ৩০০০ টাকা। ছয় জন শেয়ারিং করে থাকলে ৩৫০০ টাকা প্রতি রুম ভাড়া। বিস্তারিত: ০১৬৩৪১৯৮০০৫।

স্বপ্নচূড়া রিসোর্ট
এর বারান্দা থেকেই সাজেকের পুরো সৌন্দর্য একসাথে উপভোগ করা যায়। তবে সাজেকে সারাবছর এতটাই পর্যটকদের ভিড় লেগেই থাকে যে রিসোর্ট গুলোতে আগে থেকে বুকিং দিয়ে থাকতে হয়। এ রিসোর্টের প্রতিটি কক্ষ ভাড়া ৩৫০০ টাকা। রুম গুলো সব ডাবল বেডের। বিস্তারিত: ০১৮৫১৪৬৮১৮৩।

আলো রিসোর্ট
সাজেকের একটু আগে রুইলুই পাড়ায় এই আলো রিসোর্ট। মোট ৬ টি রুম আছে এই রিসোর্টে। ডাবল রুম ৪ টি এবং ২ টি সিঙ্গেল রুম। ডাবল রুমের ভাড়া ৮০০ থেকে ১৫০০ টাকা। দুটি বেডযুক্ত রুমগুলো। দুটি সিঙ্গেল বেডের কক্ষের ভাড়া ১৫০০ আর ১ টি ডাবল বেডের রুমের ভাড়া ১০০০ টাকা। যোগাযোগ করুন: ০১৮৬৩৬০৬৯০৬।

আদিবাসি ঘর
অনেক কম খরচে থাকতে চাইলে আদিবাসি ঘরের কোনো বিকল্প নেই। ঘরগুলোতে জন প্রতি ১৫০ থেকে ৩০০ টাকায় থাকা যায়। যা এতো কম খরচে অন্য কোথাও সুযোগ নেই। তবে পরিবার বা কাপলদের থাকার জন্য এই ঘর আদর্শ নয়। তাই নিজ বন্ধু বান্ধবরা মিলে যদি কম খরচে ঘুরতে চায় তাহলে আদিবাসি ঘরে থাকা যেতে পারে। এতে করে রাত অনেক মজা ও হই হুল্লুরে কাটে।


জয়েন গ্রুপ- https://www.facebook.com/groups/naturenest71/

Comments

Popular posts from this blog

২০১ গম্বুজ মসজিদ

লেখকঃ  জাওয়াদ আলম জারিফ   টাঙ্গাইল নির্মাণাধীন এই মসজিদটি গম্বুজের দিক থেকে প্রথম এবং উচ্চতর দিক থেকে দ্বিতীয় হতে যাচ্ছে। এখনো পুরোপুরি কাজ শেষ হয়নি তবে প্রতিনিয়ত এখানে নামাজ পড়ানো হয়। অত্যন্ত দৃষ্টিনন্দন এই মসজিদের ছাদে ৮১ ফুট উচ্চতার একটি গম্বুজ রয়েছে। এই বড় গম্বুজের চারপাশে ছোট ছোট গম্বুজ আছে ২০০টি। এই মসজিদের ধারণ ক্ষমতা প্রায় ১৫,০০০ জন। এই মসজিদে রয়েছে চোখ ধাঁধানো সব কারুকাজ আর উপরের দেয়ালে অংকিত রয়েছে পুরো কুরআন শরীফ। যেভাবে যাবেন ঢাকা মহাখালি থেকে গোপালপুরের সরাসরি বাস রয়েছে। ভাড়া ১৫০-২০০ টাকা।আবার চাইলে একটু রিলাক্সে এসি বাসেও যেতে পারেন। কল্যানপুর থেকে ধনবাড়ি গামি এসি বাস এ করে ঘাটাইল ক্যান্টনমেন্ট নেমে সিএনজি করে গোপালপুর যেতে পারবেন। বাস যেখানে থামে সেখান থেকে অটো বা সিএনজি করে যাওয়া যায় পাথালিয়া ইউনিয়নের এই মসজিদে। আবার ফেরত আসার সময় গোপালপুর থেকে বিকেল পাঁচটায় সর্বশেষ ঢাকাগামী বাস ছেড়েআসে। আর কেউ যদি ট্রেনে যেতে চান তাহলে সকাল ৬:৩০ টায় কমলাপুর রেল স্টেশন থেকে টাঙ্গাইলের ট্রেনে উঠে চলে যেতে পারেন। খরচ ঢাকা মহাখালি থেকে গোপালপুরের সরাসরি বাস ১৫০-২০০ টাকা। বাসস্ট্য...

মেঘের রাজ্য মেঘালয় ভ্রমণ

মেঘালয় ট্যুর ৫ রাত ৪দিন।ভিসা প্রসেসিং আর ট্রাভেল ট্যাক্স সহ ৮২০০ টাকায় সকল খরচ। কোথায় যাবেন, কোথায় থাকবেন, ঘুরবেন, খরচ সহ বিস্তারিত তথ্য দিয়ে দিলাম। আসা করি লেখা টি পড়ে আপনি নিজে মেঘালয় ঘুড়ে আসতে পারবেন কোন ঝামেলা ছাড়া। মেঘালয় যাওয়ার কথা ভাবছেন? ভালো কোন গ্রুপ বা কোন প্যাকেজ পাচ্ছেন না? একা গেলে খরচ বেশি তাই ইচ্ছা থাকা সত্যও যেতে পারছেন না? তাহলে আপনার জন্যই আমার এই লেখা।আপনার ভ্রমনে বিন্দু পরিমানে উপকারে আসলেও আমার কষ্ট করে লেখা সার্থক। ছোট বেলা থেকেই মেঘ ছোয়ার ইচ্ছে ছিলো প্রবল। সাজেক(খাগড়াছড়ি) আর নীলগিরি(বান্দরবন) ভ্রমনে মেঘের খেলা দেখে মেঘের প্রতি দুর্বলতা আরও বেশী বেড়ে যায়।ভাবতে থাকি কিভাবে মেঘ আরও কাছ থেকে ধরা-ছোঁয়া যায়।অবশেষে অপেক্ষার পালা শেষ হলো।মেঘ ধরার স্বপ্ন নিয়ে মেঘের রাজ্য “মেঘালয়” গেলাম। আমি গত ১৫অক্টোবর রাতের গাড়িতে মেঘালয় যাই এবং ২০তারিখ ফিরে আসি। ভিসা প্রসেসিংঃ ৮০০টাকা। ট্রাভেল ট্যাক্সঃ ৫০০টাকা। ১ম রাতঃ বাসা থেকে সায়দাবাদঃ৩০টাকা। ঢাকা টু তামাবিল(জাফলং ও একই ভাড়া)বাস ভাড়াঃ ৪০০টাকা। রাতের খাবার(হোটেল উজানভাটা) ১০০টাকা। সকালের নাস্তা(বর্ডার সংলগ্ন চায়ের দোকান) ৩০টাকা। বাং...